মালয়েশিয়ান ভিসা পাওয়ার তথ্যাবলী

বাংলাদেশি সহ অন্যান্য দেশের ভ্রমণ পিয়াসুদের জন্য বিশেষ পছন্দের দেশ মালয়েশিয়া। ভ্রমন পিপাসুদের জন্য এই লেখায় থাকছে মালয়েশিয়া ভ্রমণের খুঁটিনাটি। আশা করছি এসব তথ্য আপনাকে মালয়েশিয়া ভ্রমণের ক্ষেত্রে নানান ভাবে সহায়তা করবে।
ভিন্ন দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রথম জটলা এবং বিড়ম্বনার কারন হয়ে দাড়ায় ভিসা প্রাপ্তি। তাই আমরা ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা প্রথমেই সেরে নিতে চাই। চলুন তবে……
বিভিন্ন দেশে অবস্থিত মালয়েশিয়ান দুতাবাস সমুহ থেকে মালয়েশিয়ার ভিসা ইস্যু করা হয়। বাংলাদেশি টুরিস্টদের জন্য সাধারণত ৩০ দিন মেয়াদী ভিসা প্রদান করা হয়ে থাকে। ক্ষেত্র বিশেষে মেয়াদ বাড়ানোর ব্যাবস্থাও রয়েছে। মালয়েশিয়া সরকার দুই ধরনের টুরিস্ট ভিসার ব্যবস্থা করে থাকে। সিঙ্গেল এন্ট্রি এবং মাল্টিপল এন্ট্রি। ভিসা পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে আপনাকে মালয়েশিয়া যেতে হবে, তা না হলে ভিসা অকার্যকর হিসাবে গণ্য হবে।
সিঙ্গেল এন্ট্রি মানে আপনি ভিসা পাওয়ার পর সেটা দিয়ে একবার মাত্র ভ্রমণ করতে পারবেন। ভ্রমণের মেয়াদ ৩০ দিন। এর পর মেয়াদ বাড়াতে চাইলে মালয়েশিয়া ইমগ্রেশন অফিসে যেতে হবে। সেখানে আরো ৩০ দিন মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ আছে এবং তা বিনামূল্যে।
মাল্টিপল এন্ট্রি  হলে, আপনি ৩০ দিন বা ৯০ দিনের মেয়াদ পাবেন। আর এ ক্ষেত্রে এই সময়ের ভিতর আপনি যতবার খুশি বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া যাতায়াত করতে পারবেন। বলে রাখা ভালো, মাল্টিপল এন্ট্রির জন্য ভিসা এক্সটেনশন বা ভিসার মেয়ার বাড়ানোর কোন সুযোগ নাই।
পূর্বে মালয়েশিয়ার ভিসার জন্য যাবতীয় কাগজপত্র নিজে নিজে সাবমিট করে ভিসা পাওয়ার সুযোগ ছিল। বর্তমানে সেটা আর নেই। বর্তমানে অবশ্যই কোন ট্র্যাভেল এজেন্সির মাধ্যমে আপনাকে ভিসার জন্য এপ্লাই করতে হবে।
মালয়েশিয়ার টুরিস্ট ভিসার জন্য আপনি বাড়তি সুবিধা পাবেন যদি মালয়েশিয়া থেকে আপনি কোন ইনভাইটেশন লেটার পান।
ব্যবসায় ও বিনিয়োগ সংক্রাত কারনে মালয়েশিয়া সরকার রেফারেন্স ভিসার ব্যবস্থা রেখেছেন (বি ডব্লিউ আর)। মালয়েশীয় ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের অনুমোদনের মাধ্যমে এ ভিসা ইস্যু করা হয়। মালয়েশিয়া প্রবেশের আগেই মালয়েশিয়ান কনস্যুলেট বা দূতাবাস থেকে এ ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। কেবলমাত্র ব্যবসা ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে এই ভিসা ইস্যু করা হয়। ভ্রমণটি মালয়োশীয় কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে স্পন্সর করতে হবে। যে প্রতিষ্ঠান স্পন্সর করবে সেটি অবশ্যই একটি প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান হতে হবে এবং ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টে ফর্ম ৯, ২৪ এবং ৪৯ জমা দিতে হবে।
এ ভিসার আবেদন করতে স্পন্সরকে জনপ্রতি ২,০০০ দুই হাজার মালয়েশীয় রিঙ্গিত জামানত হিসেবে জমা দিতে হয়। ভ্রমণকারী সর্বোচ্চ ৩০ দিন অবস্থান করতে পারবেন এবং মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ নেই।
মালয়েশিয়ার ভিসার জন্য আবেদনের নিয়মাবলীঃ
ভিসা আবেদন ফরমটি অনলাইনে(www.imi.gov.my)সাইট থেকে ডাউনলোড করে যথাযথভাবে পূরণ করে জমা দিতে হবে। সরাসরি ভিসা আবেদন গ্রহণ করা হয় না। ২৫টি অনুমোদিত এজেন্সীর মাধ্যমে ভিসা আবেদনপত্রটি জমা দিতে হবে। আর ভিসা ইস্যু করার বিষয়টি দূতাবাসের ওপর নির্ভরশীল।
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি:
• সাদা পটভূমিতে (ব্যাকগ্রাউন্ড) দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি; ছবিগুলোর স্টুডিও প্রিন্ট হতে হবে।
• পাসপোর্টের মেয়াদ অন্তত ৬ মাস হতে হবে এবং পাসপোর্টে অন্তত তিনটি ধারাবাহিক খালি পৃষ্ঠা থাকতে হবে।
• পাসপোর্টের ফটোকপি ও মূলকপি।
• আগে মালয়েশিয়া ভ্রমণ করে থাকলে ভিসার কপি।
• ফিরতি বিমান টিকেটের কপি।
• আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ হিসেবে অন্তত তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, সাথে ব্যাংক সলভেন্সি স্টেটমেন্ট। বাংলাদেশর বাইরে অবস্থানরতদের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড।
• ভ্রমণের কারণ উল্লেখ করে করা আদেনপত্র।
• কারো আমন্ত্রণে মালয়েশিয়া গেলে আমন্ত্রণপত্র বা রেফারেন্স লেটার।
• বাংলাদেশে বসবাস করছেন অথচ বাংলাদেশী নন এমন আবেদনকারীর ক্ষেত্রে চাকরি এবং বাংলাদেশে থাকর অনুমতিপত্র দেখাতে হয়।
মালয়েশিয়ার জন্য ভিসা ফি:
• বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীদের ক্ষেত্রে ৩,১০০ তিন হাজার এক শত টাকা,
ভিসার আবেদন পত্র সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট থেকে ১০টা ৩০ মিনিট এই সময়ের মধ্যে জমা দিতে হয়। আবেদনের ১০ থেকে ১২ দিন পর সাপ্তাহিক বন্ধ ছাড়া যে কেনো দিন দুপুর ৩টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে নিয়ে আসতে পারবেন।